ডিজিটাল মার্কেটিং কি? What is Digital Marketing?

What is Digital Marketing?
Blog

ডিজিটাল মার্কেটিং কি? What is Digital Marketing?

আধুনিক যুগে, মানুষের জীবনে প্রযুক্তির প্রভাব অসাধারণ! আর এই প্রযুক্তির সাহায্যেই ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও আমূল পরিবর্তন এসেছে। এখন আর শুধু বিলবোর্ড বা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েই চলে না। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে অনলাইনে কাস্টমারদের কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে আরও সহজ ও কার্যকরী উপায়ে।

ডিজিটাল মার্কেটিং হলো এমন একধরণের মার্কেটিং পদ্ধতি, যেখানে বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যম যেমন ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া, মোবাইল অ্যাপ, ইমেইল ইত্যাদি ব্যবহার করে পণ্য বা সেবার প্রচার করা হয়। লক্ষ্য হলো কাস্টমারদের আকর্ষণ করা, তাদের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখা এবং সেলস বাড়ানো।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে অনেকগুলো ক্যাটাগরি বা উপ-পদ্ধতি আছে। চলুন, সেগুলোর কয়েকটি নিয়ে আলোচনা করা যাক:

SEO হল এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ওয়েবসাইট বা কন্টেন্টকে এমনভাবে সাজানো হয় যাতে গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনগুলো সহজে সেগুলো খুঁজে পায় এবং সার্চ রেজাল্টে ওপরে দেখায়।

  • কীওয়ার্ড গবেষণা: সার্চ ইঞ্জিনে কাস্টমাররা কোন শব্দ বা বাক্যাংশ ব্যবহার করছেন তা চিহ্নিত করা।
  • অন-পেজ SEO: ওয়েবসাইটের ভিতরের উপাদানগুলির অপ্টিমাইজেশন, যেমন মেটা ট্যাগ, হেডিং, ইমেজ অল্ট ট্যাগ।
  • অফ-পেজ SEO: অন্যান্য ওয়েবসাইট থেকে লিংক (ব্যাকলিংক) অর্জন করা।

SEM একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে পেইড বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজে উপরে তোলা হয়।

  • PPC (Pay-Per-Click): কাস্টমাররা বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলে বিজ্ঞাপনদাতারা টাকা প্রদান করে।
  • Google Ads: গুগল সার্চ রেজাল্টে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য ব্যবহৃত।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগিয়ে পণ্য বা সেবার প্রচার করা হয়।

  • প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার: ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, লিংকডইন ইত্যাদি।
  • ব্র্যান্ড এওয়ারনেস: কাস্টমারদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ এবং ব্র্যান্ডের প্রচারণা।
  • কনটেন্ট শেয়ারিং: ভিডিও, ইমেজ, ইনফোগ্রাফিকস, পোস্ট ইত্যাদির মাধ্যমে আগ্রহ তৈরি করা।

কনটেন্ট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে তথ্যবহুল ও আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরি করে কাস্টমারদের আগ্রহ জাগানো হয়।

  • ব্লগ পোস্ট: তথ্যপূর্ণ আর্টিকেল যা কাস্টমারদের সমস্যার সমাধান প্রদান করে।
  • ইনফোগ্রাফিকস: ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট যা তথ্য সহজভাবে উপস্থাপন করে।
  • ভিডিও কনটেন্ট: প্রোডাক্ট ডেমো, টিউটোরিয়াল, এবং অন্যান্য ভিডিও যা কাস্টমারদেরকে পণ্য সম্পর্কে জানায়।

প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ব্যবহার করে পণ্য বা সেবার প্রচারণা করা হয়।

  • সেলেব্রিটি ইনফ্লুয়েন্সার: সেলেব্রিটিরা তাদের অনুসারীদের সাথে পণ্যের সম্পর্কে শেয়ার করে।
  • মাইক্রো ইনফ্লুয়েন্সার: সাধারণত ছোট অনুসারী সংখ্যা কিন্তু উচ্চ সম্পৃক্ততা।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এমন একটি পদ্ধতি যেখানে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে পণ্য বা সেবা প্রচারিত হয় এবং তারা প্রতিটি বিক্রয় বা লিডের জন্য কমিশন পায়।

  • অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক: বিভিন্ন ব্যবসায়ের অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামগুলি পরিচালনা করে।
  • পারফরম্যান্স বেসড: অ্যাফিলিয়েটরা তাদের প্রচারণার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে অর্থ উপার্জন করে।

ডিজিটাল চ্যানেলগুলির মাধ্যমে পাবলিক রিলেশন কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

  • প্রেস রিলিজ: অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ব্লগগুলিতে প্রকাশ করা।
  • ইনফ্লুয়েন্সার আউটরিচ: ব্লগার, ভ্লগার, এবং অন্যান্য অনলাইন প্রভাবশালীদের সাথে সহযোগিতা করা।

মোবাইল ডিভাইস ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে মার্কেটিং কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

  • এসএমএস মার্কেটিং: কাস্টমারদের কাছে প্রমোশনাল বার্তা পাঠানো।
  • মোবাইল অ্যাপ মার্কেটিং: মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে পণ্য বা সেবা প্রচারণা।

রিমার্কেটিংয়ের মাধ্যমে পূর্বে ওয়েবসাইটে ভিজিট করা ব্যবহারকারীদের আবার টার্গেট করা হয়।

  • কুকিজ ব্যবহার: ব্যবহারকারীর ব্রাউজিং হাবিট ট্র্যাক করে পুনরায় বিজ্ঞাপন প্রদর্শন।
  • কাস্টম অডিয়েন্স: সেগমেন্টেড অডিয়েন্সের জন্য বিশেষ বিজ্ঞাপন তৈরি।

 

ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রভাব এবং কার্যকারিতা সময়ের সাথে সাথে বাড়ছে এবং এটি আধুনিক ব্যবসার অপরিহার্য একটি অংশ হয়ে উঠেছে। প্রতিটি ব্যবসার প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী উপযুক্ত ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, যাতে ব্যবসা বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়ে এবং কাস্টমারদের সাথে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক স্থাপন করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *